সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শিকলে বন্দী থেকেই বেড়ে উঠছে মোছাঃ ফাতেমা খাতুন (১০) নামের একটি তরুন কিশোরী। দীর্ঘ ৪ বছরের বেশি সময় ধরেই পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় তাকে দিন পার করতে হচ্ছে। অস¦চ্ছল পরিবারে অর্থাঅভাবে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে সে। ফাতেমার পরিবারের দাবী দিনে রাতে কিছু সময় ভাল থাকলেও বেশির ভাগ সময়ই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে সে। আর এ সময় পরিবারের সদস্যদের চোখের আড়াল হলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যাওয়া সহ প্রতিবেশীদের সাথে বিদরুপ আচরন করে ফেলে সে। তাই পরিবারের ইচ্ছার বাহিরেই বাধ্য হয়ে তরুন এই কিশোরী কে পায়ে শিকল বন্দী করে রাখতে হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন ফাতেমা উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের ভাটড়া গ্রামের রিক্সা চালক মোঃ তফিজ উদ্দিনের মেয়ে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে ফাতেমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় এদিক ওদিক ছুটো ছুটি করছে সে। আবার কখনো বসে শিকল হাতে ধরে অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে প্রতিবেশীর কিশোর কিশোরীদের
দূরন্তপনা দেখতে। ফাতেমার দিনমুজুর মা কাঁন্না জড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদক কে জানান, মেয়ে ফাতেমা কে নিয়ে অনেক স¦প্ন ছিলো। লেখাপড়া শিক্ষায়ে সরকারি চাকুরী করবে। কিন্ত তা আর হলো না মেয়ে একটু বেড়ে উঠতেই দেখা দিলো মানুষিক সমস্যা । আমাদের অভাবের সংসারে দু মুঠো ভাত জোগাতেই হিমসিম খেতে হয় । মেয়ের চিকিৎসা করাবো কি করে।
ডিজিটাল বাংলাদেশে সরকারের নাগরিক কোন সুযোগ পান কিনা ফাতেমা। জানতে চাইলে তার মা দীর্ঘশ^াস ফেলে জানান, মেয়ে প্রতিবন্ধী সে ভাতাটাও সে পান না। কেন পান না .? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,স্থানীয় ইউপি সদস্য সহ অনেকের দ¦ারে দ¦ারে গিয়েও টাকা ছাড়া কোন কাজই হয়নি।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ফাতেমার শিকল বন্দী করুন কাহিনী শুনে আমি নিজেও মর্মহত। এমন কিশোরী এখনো যে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আসেনি এটা দুঃখ জনক। আমি দ্রুতই ফাতেমার সূবর্ন নাগরিক কার্ড সহ প্রতিবন্ধী ভাতা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।