রসালো ফল আম, এ ফল কাঁচা-পাকা সবারই পছন্দ। শীতকাল শেষে বইছে ঋিতু রাজ বসন্তের হাওয়া। আর গাছের ডালে হিমেল হাওয়ায় দুলছে আমের মুকুল। পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তবে রূপ নিতে বাকি রয়েছে মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। এমনই দৃশ্যের দেখা মিলেছে তাড়াশ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে। দুরন্ত শৈশবে কাঁচা-পাকা আম পাড়ার আনন্দ অনেকেরই স্মৃতিতে চির অমর।
এ উপজেলায় প্রায় প্রতিটি গাছে ফুটে আছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে তুলে। মধু সংগ্রহ করতে মৌমাছিরা ভিড় করছে আম গাছের ডালে ডালে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের এই মুকুলগুলো। হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ, এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। চারদিকে ছড়িয়ে পড়া মুকুলের ঘ্রাণ প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করছে। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে, ছোট পাখিরাও মুকুলে বসছে মনের আনন্দে। কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতালে ফাগুনের উত্তাল বাসন্তী হাওয়া দিচ্ছে দোলা। সরেজমিনে তাড়াশ পৌরশহর ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, পুকুর পাড়, রাস্তার ধারে ও বাড়ির আঙ্গিনার গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে কেবলই আমের মুকুল। মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা, চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।
বছরের নির্দিষ্ট এই সময়জুড়ে চাষি তো বটেই চলতে-ফিরতে সবশ্রেণির মানুষেরও নজর থাকে আমগাছের মগডালে। মুকুলের সৌরভ ছড়িয়ে পড়েছে আকাশে বাতাসে। কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর মৌসুমের শুরুতে কিছু গাছে মুকুল আসতে বিলম্বিত হচ্ছে, কারণ চলতি মৌসুমে এখনও বৃষ্টিপাত হয়নি যদিও এর পরিমান অনেক কম, তথাপি করণীয় সম্পর্কে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিতে বলেছেন।
এ ফসল অনেকটা প্রাকৃতিক আবহাওয়া এবং পরিচর্যার উপর ফলন নির্ভরশীল। আবহাওয়া অনুকূলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ আশাতেই বুক বেধে আমচাষীরা শুরু করেছেন পরিচর্যা তাদের আশা, চলতি মৌসুমে আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।
ঝর্ণা আক্তার/ আজকের সিরাজগঞ্জ