সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গহনা বিক্রি করে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কে ঘুষ দিয়ে নিতে হয়েছে সরকারের দেওয়া বিনামুল্যে বকনা বাছুর (গরু)। এ ঘটনাটি নিয়ে চলনবিল এক্সপ্রেসে সংবাদ প্রকাশের সচিত্র প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদেও প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে চিঠি দিয়েছেন সমতল ভূমিতে বসবাসরতঅনগ্রসর ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠির আর্থ সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রানিসম্পদ প্রকল্পের পরিচালক ড.অসীম কুমার দাস। যাহার স্মারক নং-৩৩.০১.০০০০.৮৩৩.০১.০০২.২৪-
গত ২৩ মার্চ চলনবিল এক্সপ্রেসে তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ সদর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের নারায়ন চন্দ্রের মেয়ে কল্পনা বালা (ভোটার আইডি নং-৭৮০৭৭৩৪৮০৬) কে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আকতার হোসেন নগদ ১০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে বিনামুল্যে সরকারের দেওয়া সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বকনা বাছুর পাইয়েদেন। এ ছাড়াও ঘুষের টাকার বিষয় কাউকে না বলতেও নিষেধ করেন তিনি। শুধু কল্পনা বালাই না বিনামুল্যে সরকারের দেওয়া গরু পেতে তার মতো তাড়াশ সদর ইউনিয়নের আরো অনেকেই গুনতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এখন মুখ খুলতে শুরু করছেন ভুক্তভোগীরা। এমন সংবাদটি প্রকাশের পর নজরে আসে ওই প্রকল্পের পরিচালকের এবং তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে চিঠি প্রদান করেন।
সরেজমিনে অভিযোগের বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে ভুক্তভোগী কল্পনা বালার বাড়িতে গিয়ে তার সাথে কথা বললে তিনি এ প্রতিবেদক কে বলেন, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আকতার হোসেন আমাদের এই বাড়িতে এসে গরু দেবে বলে ১০ হাজার টাকা দাবী করেন। না দিলে গরু পাওয়া যাবেনা বলে জানান। আমরা অভাবী মানুষ বড় একটা গরু পেলে উপকার হবে ভেবে আমার কানের গহনা ৮ হাজার টাকা বিক্রি করে আকতার হোসেনের হাতে দেই।
এ ছাড়াও বোয়ালীয় গ্রামের নকুল কর্মকারের স্ত্রী তপ রানীর নামে বকনা বাছুর উত্তোলন দেখানো হলেও সে সম্পর্কে জানেনই না তিনি। তপ রানীর ছেলে ভরত কর্মকার জানান,আমার মায়ের নামে গরু দেওয়া হয়েছে তালিকায় দেখলাম কিন্তু আমরা পাইনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন ভুয়া নাম দিয়ে গরু তুলে বাড়িতে খামার করেছেন প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেন।
তাড়াশ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওয়ালী-উল-ইসলাম বলেন, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেনের সরকারি গরু বিতরনে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর আমাদের সংশিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মহদোয়ের নজরে আসে এবং তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার কে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে চিঠি প্রদান করেছেন।
এ ব্যাপারে সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক ডা. অসীম কুমার দাস বলেন,এই প্রকল্পে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। এ ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে দেখে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।