সিরাজগঞ্জ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসক পদ খালি থাকায় মিলছে না শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা। পাঁচ বছর আগে চিকিৎসক যোগদান করলেও প্রেষণ ও সংযুক্তি নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়া বিপাকে পড়েছেন ফার্মাসিস্ট রবিউল ইসলাম। এদিকে চিকিৎসক ও ঔষধ না থাকায় ফার্মাসিস্ট রবিউলের দিনের পর দিন অফিসে বসে অলস সময় পার করতে হচ্ছে। আর এ কারণেই প্রান্তিক শ্রমিকেরা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে সরজমিনে সোমবার (১২ মে) দুপুর ও মঙ্গলবার (১৩ মে) দিনভর অফিস ঘুরে শ্রম কল্যাণ সংগঠক এখলাছুর রহমানকে পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, যাদের শ্রম-ঘাম-রক্তে দেশের অর্থনীতির ভিত রচিত হয়, সেই পোশাক শ্রমিকরা যেন সবসময় ‘সুবিধাবঞ্চিত’ হন। কর্মস্থলে দীর্ঘসময় টানা কাজ করে অসুস্থ হয়ে পড়লেও পান না সুচিকিৎসা। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জন্য চিকিৎসা সেবা, প্রশিক্ষণ নেওয়া, বিনোদনসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সিরাজগঞ্জ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হলেও শ্রমিকরা এসব সেবার খবরই রাখেন না। প্রচার-প্রচারণার অভাবে অনেক শ্রমিকই জানেন না শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের খবর ও এখানকার প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি।
সরকারি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের সেবা ও সুযোগ-সুবিধার ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে শ্রমিক অধিকার এবং সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটিকে সচল রাখার দাবি জানিয়েছেন এ জেলার বিশিষ্টজনেরা। এছাড়াও প্রায় সব রাজনৈতিক দলেরই রয়েছে একটি করে শ্রমিক সংগঠন। জেলায় শ্রমিক ইউনিয়ন আর শ্রমিক সংগঠনের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে এগুলোর বেশিরভাগই শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত জেলার শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটিকে আরও সক্রিয় করে এর সেবা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে বহুতল ভবন নির্মান করে আসছে।
সিরাজগঞ্জ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের অফিস সূত্রে জানা যায়, এই কেন্দ্রে মেডিক্যাল অফিসার, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা, শ্রম কল্যাণ সংগঠক, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা, ডিসপেনসারি এ্যাটেনডেন্ট, ফার্মাসিস্ট, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, অফিস সহায়ক, আয়া, নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতা-কর্মীর পদ রয়েছে। এর মধ্যে মেডিক্যাল অফিসার ২০২০ সালে চলে যাওয়ায় পদটি শূন্য রয়েছে। যা শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটির চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে ডাক্তার না থাকায় ফার্সাসিস্ট রবিউল ইসলাম পাঁচ বছর ধরে অলস সময় পার করে যাচ্ছেন।
এসব বিষয়ে ফার্সাসিস্ট রবিউল ইসলাম বলেন, ২০২০ সাল থেকে ডাক্তার না থাকায় সময় মতো অফিসে আসা আর যাওয়া ছাড়া কাজ নেই। তবে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সরকারের এ দপ্তরে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
অটোভ্যান চালক আব্দুল আলিমসহ বেশ কয়েকজন রিকশা-ভ্যান চালক বলেন, প্রায় ১৫ বছর থেকে আমি ভ্যান চালাই। সিরাজগঞ্জ শহরে আমাদের জন্য চিকিৎসা সেবা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে সেটা আমার জানা নাই। এ ধরনের সুযোগ সুবিধা পেলে আমাদের মতো গরীব মানুষদের অনেক উপকার হতো।
সিরাজগঞ্জ হেল্পগ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহবুব চৌধুরী বলেন, সিরাজগঞ্জে শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র আছে এটা শ্রমিকতো দূরের কথা এ জেলার মানুষও জানে না। শুনেছি ওই কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ মেডিক্যাল অফিসারের পদ আছে। কিন্তু সেই পদও শূন্য রয়েছে। তাহলে কি সেবা পাবে শ্রমিকরা? তাই যত দ্রুত সম্ভব শূন্য পদগুলো পূরণ করাসহ সব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারণা প্রয়োজন।
ফার্মাসিস্ট রবিউল ইসলামের নির্দিষ্ট কাজ না থাকলেও অফিসের অন্যান্য কাজে সহযোগিতার দাবী তুলে সিরাজগঞ্জের শ্রম কল্যাণ সংগঠক এখলাছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, মেডিকেল অফিসার না থাকায় তিনি নিয়মিত ডিউটি করছেন।
এসব বিষয়ে আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর, বগুড়া ও আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্তা, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ শহিদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রধান সম্পাদক: জাকিরুল ইসলাম সান্টু II প্রকাশক: জেহাদুল ইসলাম II দৈনিক আজকের সিরাজগঞ্জ সংবাদ ও বাণিজ্যিক কার্যালয়, মুজিব রোড, চৌরাস্তা মৌর, সিরাজগঞ্জ II মোবাইল: 01711969182, 01712061091 Email- ajkresganj1963@gmail.com
All rights reserved © 2019 dailyajkersirajgonj.com