সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সেলিম রেজার (৪৮) বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মসহ এলাকার সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রশয়ে তার অপকর্ম থেমে নেই বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে ওই ইউনিয়নের পাইকশা গ্রামে গেলে সাথী খাতুন, ৯নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মমিন, পাইকশা ফাজিল মাদাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বজলুর রহমান, ফজলু সেখ ও মাজেদুল ইসলামসহ স্থানীয় ভুক্তভোগীরা এমন অভিযোগ তুলেছেন।
সাথী খাতুন অভিযোগ করে বলেন, বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তার স্বামী আব্দুল্লাহ শেখকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সেলিম ও তার লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে মাথায় আঘাত ও শরীলের বিভিন্ন অংশে বেধড়ক মারপিট করে। শুধু তাই নয়, তার সঙ্গে থাকা নগদ ২৫ হাজার ৩০০ টাকাও ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় সেলিম রেজাকে প্রধান করে ৬ জনের নামে একটি হত্যা চেষ্টার মামলাও দায়ের করেছেন তিনি। এতে আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মমিন বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর সেলিমের অত্যাচারে আমরা ঘরে থাকতে পারি নাই। সাধারণ মানুষও তার এই অত্যাচার থেকে রক্ষা পায়নি। এখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় নেই।তবুও তিনি বিএনপির কিছু নেতার প্রশয়ে এলাকায় নানান অপকর্ম করছেন। তার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে স্থানীয় যুবদলের এক নেতা দেশের বাইরেই চলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, সেলিম শুধু আওয়ামী লীগের একজন নেতা না। তিনি একজন বড় অর্থ দাতা। যে কারণে এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। চোরাই পথে সুতার ব্যবসা করে সে এখন শতকোটি টাকার মালিক। বাস করেন বিলাসবহুল বাড়িতে। অথচ এক সময় তার কিছুই ছিল না।
স্থানীয় ফাজিল মাদাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বজলুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, সেলিম রেজা মাদারাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি না হতে পেরে আমায় মারধর করেছিল। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি তিনি। সেলিমের শাস্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনও করেছিলেন বলে তিনি জানান।
অপরদিকে অভিযুক্ত ঝাঐল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সেলিম রেজা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আব্দুল্লাহ শেখের হামলার ঘটনায় তিনি জড়িত নয়। তবুও তাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে। পতিত আওয়ামী লীগের শাসন আমলে তার প্রভাব বিস্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দল ইচ্ছা করে আমায় পদ দিলেও দিতে পারে। তবে সেটার পরিচয় কখনও দেয়নি।
উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বলেন, আব্দুল্লাহ শেখের ওপর হামলার ঘটনায় গতকাল বোরহান সরকার নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, ওই মামলা রেকর্ড হওয়ার পরই শুক্রবারে একজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।